শাকীক বালখী (রহঃ)

❝দুনিয়াতে যত ভালো ও সাওয়াবের কাজ আছে তার সবই এই ৮টি বিষয়ের মধ্যে রয়েছে❞শাকীক বলখি রহ.। হিজরি ২য় শতকের খ্যাতনামা সাধক পুরুষ। দুনিয়াবিমুখ সাধনা, তাকওয়া আর আমল ইবাদাতে যিনি সময়ের সেরাদের একজন। দূর দূরান্ত থেকে লোকজন এসে শাইখের সান্নিধ্যে পড়ে থাকেন। এ যেনো আসহাবুস সুফফার অনুসারী দল। এ দলেরই একজন হাতিম আসাম রহ.। পরিচিত জন ডাকেন আবু আব্দির রহমান। ইমাম যাহাবির মতে হাতিম আসাম রহ.-কে বলা হয় এই উম্মাতের লুকমান হাকীম। [১]৩৩ বছর যাবত তিনি শাইখ শাকীক বলখির সান্নিধ্যে আছেন। প্রতিনিয়ত শিখছেন। নিজেকে ভেঙে নতুন করে গড়ছেন। একদিন ডাক পড়ল হাতিম আসামের। আবু আব্দির রহমান, তোমার সাথে আমার এই পথ চলা কতদিনে গড়ালো? ৩৩ বছর। বলো কি, ৩৩ বছর? জি শাইখ। তা এই ৩৩ বছরে কী কী শিখলে শুনি। ৮ টি বিষয় শিখেছি। কয়টি? ৮ টি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজিউন! জীবনটা তো প্রায় তোমার সাথেই কেটে গেলো। আর তুমি কিনা মাত্র ৮ টি বিষয় শিখেছ? আফসোস। আসলে আমি এই ৮ টি বিষয়ই শিখেছি। এখন মিথ্যা বলা তো আর সম্ভব না। আচ্ছা, বলো দেখি কী সেই ৮ টি বিষয়, যা তুমি এতদিনে শিখলে। জি বলছি। ❑১❑ আমি লক্ষ্য করে দেখলাম প্রত্যেকেই কোনো না কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে ভালোবাসে। এর সাথে অন্তর জুড়ে দেয়। কিন্তু মৃত্যু এসে তার আর তার প্রিয়তমের মধ্যে বিভাজন এঁকে দেয়। দু’জনকে আলাদা করে দেয়। কবরে সে তার প্রিয়কে পাশে পায় না। আমি তাই ভেবে চিন্তে নেক আমলকে ভালোবাসতে লাগলাম। এতে আমি যখন কবরে যাব, আমার ভালোবাসাও আমার সাথে যাবে। বিচ্ছেদের কোনো সুযোগ নেই। ❑২❑ আমি দেখলাম, কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,وَاَمَّا مَنۡ خَافَ مَقَامَ رَبِّهٖ وَ نَهَى النَّفۡسَ عَنِ الۡهَوٰىۙ‏ ﴿۴۰﴾ فَاِنَّ الۡجَـنَّةَ هِىَ الۡمَاۡوٰىؕ‏ আর যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশী থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে, তার ঠিকানা হবে জান্নাত। [২]এই আয়াত পড়ে আমি অন্তরকে প্রবৃত্তির আনুগত্য ছেড়ে আল্লাহর অনুগত হতে বাধ্য করেছি। ❑৩❑ আমি দেখলাম, দুনিয়াতে প্রতিটি মানুষই পার্থিব প্রাচুর্য্যের পিছে ছুটছে। সম্পদ অর্জন, বৃদ্ধি আর সংরক্ষণ নিয়ে সবাই ব্যতিব্যস্ত। এদিকে আল্লাহ তাআলা বলেন, مَا عِنۡدَكُمۡ يَنۡفَدُ‌ وَمَا عِنۡدَ اللّٰهِ بَاقٍ“তোমাদের কাছে যা আছে তা নিঃশেষ হয়ে যাবে এবং আল্লাহর কাছে যা আছে, তা বাকী (স্থায়ীভাবে) থাকবে।” [৩]তাই আমার যাবতীয় অর্জন দুনিয়াতে না রেখে আল্লাহর (রাস্তায় তাঁর) কাছে জমা করে দিয়েছি। যাতে আল্লাহর খাযানায় আমার বিশাল ধনভাণ্ডার সঞ্চিত থাকে। ❑৪❑ আমি লক্ষ্য করে দেখলাম, নশ্বর এই দুনিয়ায় প্রত্যকেরই গর্ব-দম্ভের কিছু না কিছু আছে। কেউ সম্পদ নিয়ে গর্ব করে তো কেউ বংশ মর্যাদা নিয়ে দম্ভ প্রকাশ করে। কেউ শক্তি সামর্থ্য নিয়ে গর্ব করে তো কেউ নেতৃত্ব কর্তৃত্ব নিয়ে দম্ভ করে বেড়ায়। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন, اِنَّ اَكۡرَمَكُمۡ عِنۡدَ اللّٰهِ اَ تۡقٰٮكُمۡ“নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে যে অধিক তাকওয়াবান (আল্লাহভীরু), সেই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাবান।”‌[৪]অতএব আল্লাহ তাআলার নিকট মর্যাদাবান হওয়ার লক্ষ্যে আমি তাকওয়াকে বেছে নিলাম। ❑৫❑ আমি গভীর উদ্বেগ নিয়ে লক্ষ্য করলাম, মানুষ একে অপরের নিন্দা করে বেড়ায়। অন্যের অর্জনের প্রতি ঈর্ষা আর প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে ওঠে। এর মূল কারণ হল সম্পদ, প্রাচুর্য্য ও বিদ্যার তারতম্য। অথচ আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন, نَحۡنُ قَسَمۡنَا بَيۡنَهُمۡ مَّعِيۡشَتَهُمۡ فِى الۡحَيٰوةِ الدُّنۡيَا وَرَفَعۡنَا بَعۡضَهُمۡ فَوۡقَ بَعۡضٍ دَرَجٰتٍ“আমি পার্থিব জীবনে তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বন্টন করে দিয়েছি এবং একের মর্যাদাকে অপরের উপর উন্নীত করেছি।” [৫]এই আয়াত আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, পার্থিব জীবনের সবকিছু আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত। তাই আমি অন্যের প্রতি হিংসা, বিদ্বেষ, আক্ষেপ ও ঈর্ষা বাদ দিয়ে তাকদীরের ফায়সালার প্রতি সন্তুষ্ট আছি। ❑৬❑ আমি দেখলাম, দুনিয়াতে প্রায় প্রতিটি মানুষেরই কারও না কারও সাথে শত্রুতা আছে। প্রত্যেকেই নিজ নিজ শত্রুর ব্যাপারে খুব সতর্ক। শত্রুকে ঘায়েল করার ফন্দিতে ব্যস্ত। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন, اِنَّ الشَّيۡطٰنَ لَـكُمۡ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوۡهُ عَدُوًّا“নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের শত্রু, অতএব তোমরা তাকে শত্রু রূপেই গ্রহণ কর।” [৬]তাই সমস্ত সৃষ্টির সাথে শত্রুতা ত্যাগ করে একমাত্র শয়তানের বিরুদ্ধে শত্রুতা শুরু করেছি। তাকে পরাস্ত করাই এখন আমার ধ্যান জ্ঞান।❑৭❑ আমি দেখলাম মানুষ রুটি রুজির জন্য চেষ্টার কোনো অন্ত রাখছে না। নিজের মান সম্মান ধূলোয় লুটিয়ে দিয়ে রুটি রুজির পিছে ছুটছে। ছুটতে ছুটতে হালাল হারামের পার্থক্য জ্ঞানটুকুও খুইয়ে বসে আছে। এদিকে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন, وَمَا مِنۡ دَآ بَّةٍ فِى الۡاَرۡضِ اِلَّا عَلَى اللّٰهِ رِزۡقُهَا

“আর পৃথিবীতে এমন কোন বিচরণশীল প্রাণীনেই, যার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নেননি। (অর্থাৎ সকলের রিযিকের দায়িত্ব আল্লাহর।)” [৭]এই আয়াত পড়ে আমি জেনে গেলাম যে, আমার রিযিকের দায়িত্ব আল্লাহর। তিনি নিজেই এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। অতএব আমি যাবতীয় লোভ লালসা আর দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে নিশ্চিন্ত মনে তাঁর ইবাদাতে মনোনিবেশ করলাম। ❑৮❑ আমি খেয়াল করে দেখলাম, প্রতিটি মানুষই কারও না কারও প্রতি আস্থা ও ভরসা রেখে চলে। বিপদে আপদে, সুখে-দুখে যে কোনো অবস্থায় সে তার আস্থা ও ভরসার পাত্রের নিকট ছুটে যায়। সে মনে করে আমার যে কোনো সমস্যা হলে অমুক আছে। তিনি সব সামলে নিবেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে আমাকে উদ্ধার করবেন। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন, وَمَنۡ يَّتَوَكَّلۡ عَلَى اللّٰهِ فَهُوَ حَسۡبُهٗ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بَالِغُ اَمۡرِهٖ‌ ؕ قَدۡ جَعَلَ اللّٰهُ لِكُلِّ شَىۡءٍ قَدۡرًا‏ “আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তাঁর কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।” [৮]অতএব আমি আল্লাহ তাআলার প্রতি আস্থা ও ভরসা রাখলাম তিনিই আমার জন্য যথেষ্ট। তিনিই আমার উত্তম অভিভাবক। শকীক বলখী রহ. এতক্ষণ তম্ময় হয়ে শিষ্যের কথা শুনছিলেন। হাতিম আসাম রহ. থামতেই তিনি ওঠে এসে শিষ্যকে জড়িয়ে ধরলেন। বারাকাল্লাহ বেটা, আল্লাহ তোমাকে এই পথে চলার তাওফীক দান করেন। সত্যি বলতে এই জীবনে আমি তাওরাত, ইনজিল, যাবূর আর কুরআনের যত ইলম হাসিল করেছি; তার আলোকে বলছি, দুনিয়াতে যত ভালো ও সাওয়াবের কাজ আছে তার সবই এই ৮টি বিষয়ের মধ্যে রয়েছে। হলফ করে বলতে পারি, কেউ যদি এই ৮টি বিষয়ের ওপর আমল করে সে যেনো সমস্ত আসমানী কিতাব অনুযায়ী আমল করল। [৯]তথ্যসূত্রঃ [১] – তারীখুল ইসলাম, ১৭/১১৮ (৮৯)।[২] – সূরা নাযিয়া ৭৯:৪০,৪১ [৩] – সূরা নাহল ১৬:৯৬[৪] – সূরা হুজরাত ৪৯:১৩ [৫] – সূরা যুখরুফ ৪৩:৩২ [৬] – সূরা ফাতির ৩৫:৬ [৭] – সূরা হূদ ১১:৬ [৮] – সূরা ত্বলাক ৬৫:৩ [৯] – ইমাম গাযালী; ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন, ১/৬৫,৬৬।

অভাব অনটনে পড়ে মানুষকে বলে বেড়ানো।

আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যদি অভাব-অনটনে পড়ে তা মানুষের নিকট উপস্থাপন করে তাহলে তার অভাব-অনটন দূর হবে না। আর যে ব্যক্তি অভাব-অনটনে পড়ে তা আল্লাহ তা’আলার নিকট উপস্থাপন করে তবে অবশ্যই আল্লাহ তা’আলা তাকে দ্রুত অথবা বিলম্বে রিযিক দান করেন।তাকে দ্রুত মৃত্যু দেন অথবা দ্রুত ধনশালী করেন এই অর্থে হাদীসটি সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ (১৪৫২), সহীহাহ (২৭৮৭)।

মহান আল্লাহ তায়ালার সিফাত

আল্লাহ্ তায়ালার সিফাত সম্পর্কে মৌলিক কিছু কথাঃ

✍️ মুফতী বেলাল বিন আলী হাফিজাহুল্লাহ্।


আমরা আল্লাহ্ তায়ালার সাথে সম্পৃক্ত শব্দ গুলোকে চারটি ভাগে ভাগ করতে পারি ।

১ – যে সকল শব্দ আল্লাহ্ তায়ালার মাঝে কোন ত্রুটি বা অসম্মান বুঝাবে, সে সকল শব্দ গুলোকে অবশ্যই তাবীল বা ব্যাখ্যা করতে হবে ।

যেমন আল্লাহ্ তালা বলেনঃ
نَسُوا اللَّهَ فَنَسِيَهُمْ

অর্থঃ তারা আল্লাহ্ তায়ালাকে ভুলে গিয়েছে । ফলে আল্লাহ্ তায়ালাও তাদের ভুলে গিয়েছেন । ( সূরা – তাওবা – ৬৭ )

উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহ্ তালার সাথে “ভুলে” যাওয়া শব্দটি ব্যবহার হয়েছে সুতরাং এখন কেউ যদি বলেনঃ “আল্লাহ্ তায়ালাও ভুলে যান”, তাহলে এটা জায়েজ হবে না ।
কারণ ভুলে যাওয়া একটি ত্রুটি আর আল্লাহ্ তায়ালা অবশ্যই সকল ত্রুটি থেকে চির পবিত্র । সুতরাং অবশ্যই এখানে ভুলে যাওয়া শব্দটিকে তাবীল করতে হবে ।
অনুরূপ আল্লাহ্‌ তায়ালা সর্বোত্তম “চক্রান্তকারী” অথবা আল্লাহ্‌ তায়ালাও তাদের সাথে “উপহাস” করেন । এজাতীয় সকল শব্দই এই প্রকারের অন্তর্ভুক্ত । অর্থাৎ অবশ্যই শব্দ গুলোকে তাবীল বা ব্যাখ্যা করতে হবে কেননা শব্দ গুলো ত্রুটি বা অসম্মান বোঝায় ।

২ – যে সকল শব্দ আল্লাহ্ তায়ালাকে সৃষ্টির সদৃশ বোঝায় ( যেমন, হাত, পা, চোখ, কোন স্থানে থাকা ইত্যাদি ) এজাতীয় শব্দ গুলোকে আল্লাহ্‌ তায়ালার সিফাত হিসাবে সাব্যস্ত করা হবে এবং শব্দ গুলোর বাহ্যিক বা শাব্দিক অর্থ থেকে আল্লাহ্ তায়ালাকে চির পবিত্র মনে করা হবে ।

এই প্রকারটা ভালোভাবে বোঝার জন্য আগে উদাহরণ দুটি বোঝার চেষ্টা করুন । ( আল্লাহ্‌ তাওফিক দান করুন । আমিন )
এটা শুধুই বোঝার জন্য উদাহরণ । আল্লাহ্ তায়ালার সাথে সাদৃশ্য দেওয়া নয় । নাউজুবিল্লাহ ।

যেমন আমি আপনাকে বললামঃ পুরো বাংলাদেশের ক্ষমতা এখন আপনার “হাতে” ।
আমার এই কথার উদ্দেশ্য মোটেও এটা নয়, “আপনার হাত আছে”, এটা বোঝানো । বরং আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আপনার ক্ষমতার ব্যাপকতা বুঝানো ।

এবার আপনি কোরআনের এই আয়াতটি নিয়ে চিন্তা করুন ।
আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ

অর্থঃ বরকতময় ঐ সত্ত্বা যার “হাতে” সর্বময় কর্তৃত্ব । ( সূরা – মূলক – ১ )

এই আয়াতটি নিয়ে চিন্তা করলে দেখবেন, এখানে আল্লাহ্ তায়ালার উদ্দেশ্য এটা বুঝানো নয়, হে বান্দা ! জেনে রাখো, আমার “হাত” আছে । বরং আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহ্ তায়ালার ক্ষমতার ব্যাপকতা বুঝানো ।

আরেকটি উদাহরণঃ
আপনার বাবা আপনাকে বললেনঃ কাজটি তুমি আমার চোখের সামনেই করো ।
এই কথা দ্বারা আপনার বাবার উদ্দেশ্য মোটেও এটা বুঝানো নয়, যে তার চোখ আছে । বরং উদ্দেশ্য হচ্ছে, আপনি কাজটি তার তত্বাবধানে বা তিনি যেভাবে বলছেন, সেভাবে করুন ।

এবার আপনি কোরআনের এই আয়াতটি নিয়ে চিন্তা করুন ।
আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ
وَاصْنَعِ الْفُلْكَ بِأَعْيُنِنَا

অর্থঃ আর তুমি আমার “চোখের” সামনে কিশতি তৈরি কর । ( সূরা – হূদ – ৩৭ )

উল্লেখিত আয়াতটি নিয়ে আপনি চিন্তা করলে দেখবেন, এখানেও আল্লাহ্ তালার উদ্দেশ্য এটা বুঝানো নয়, হে বান্দা ! জেনে রাখো, আমার চোখ আছে । বরং উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহ্ তায়ালা যেভাবে আদেশ করছেন, সেভাবে করুন ।

যত আয়াতে হাত, চোখ, চেহারা ইত্যাদি শব্দ গুলো আল্লাহ্ তায়ালার সাথে ব্যবহৃত হয়েছে, সে সকল আয়াত নিয়ে চিন্তা করলে দেখবেন, এখানে আল্লাহ্ তায়ালার জন্য শারীরিক বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সাব্যস্ত করা উদ্দেশ্য নয় বরং উদ্দেশ্য হচ্ছে আয়াতের মূল বক্তব্যকে জোরদার করা ।

সিফাতের এই প্রকারকে কেন্দ্র করে ইসলামে কয়েকটি বাতিল ফিরকা বা দল তৈরি হয়েছে । যেমনঃ

ক – মুতাজিলা এবং জাহমিয়া ।
তারা যখন দেখলো, আল্লাহ্‌ তায়ালার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে এমন কিছু শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, যা দৈহিক বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বোঝায় এবং আকিদা হল, আল্লাহ্‌ তায়ালা দৈহিক বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ থেকে চির পবিত্র । তখন তারা ঢালাওভাবে শব্দগুলোকে তাবীল বা ব্যাখ্যা করলেন এবং শব্দ গুলোকে আল্লাহ্‌ তায়ালার সিফাত হওয়াতে অস্বীকার করলেন । নাউজুবিল্লাহ ।

খ – মুজাসসিমা এবং মুশাব্বীহা ।
তারা উল্লেখিত শব্দগুলোকে তার শাব্দিক বা বাহ্যিক অর্থ ধরে আল্লাহ্ তায়ালার জন্য দৈহিক বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সাব্যস্ত করে দিলেন । নাউজুবিল্লাহ ।
নামধারী সালাফী বা আহলে হাদিসরা এই মুজাসসিমা বা দেহবাদী আকিদার বংশধর । এজন্য এরাও তাদের পূর্বসূরীদের মত বলেনঃ আল্লাহ্ তায়ালার হাত, চেহারা, চোখ, ইত্যাদি আছে ।

আহ্লুস সুন্নাত ওয়াল জামাতের অবস্থান উভয়ের মাঝামাঝিঃ
জেহুতু শব্দ গুলো আল্লাহ্‌ তায়ালার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয়েছে সুতরাং আল্লাহ্‌ তায়ালার বিভিন্ন সিফাতের মত, এই শব্দ গুলোও আল্লাহ্‌ তায়ালার সিফাত ।
জেহুতু আল্লাহ্‌ তায়ালা দৈহিক বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ থেকে চির পবিত্র সুতরাং এই শব্দ গুলোর শাব্দিক বা বাহ্যিক অর্থ আল্লাহ্‌ তায়ালার ক্ষেত্রে অসম্ভব ।

খোলাসাঃ আহ্লুস সুন্নাত ওয়াল জামাত, এজাতীয় শব্দ গুলোকে আল্লাহ্‌ তায়ালার সিফাত হিসাবে সাব্যস্ত করেন কিন্তু শব্দ গুলোর শাব্দিক বা বাহ্যিক অর্থ থেকে আল্লাহ্‌ তায়ালাকে চির পবিত্র মনে করেন ।

তবে মুজাসসিমা এবং মুশাব্বীহা ফেরকার আবির্ভাবের পর আহ্লুস সুন্নত ওয়াল জামাতের পরবর্তী ইমামদের কেউ কেউ সাধারণ মানুষদেরকে মুজাসসিমাদের দেহবাদী আকিদা থেকে ফিরানোর উদ্দেশ্যে, এই প্রকারের কিছু শব্দকে শর্ত সাপেক্ষে তাবীল করেছেন ।
( তাবীল এবং তার শর্ত নিয়ে আমি “সালাফিদের সালাফ বিরোধী আকিদাতে” আলোচনা করেছি । আলহামদুলিল্লাহ্ )

৩ – কিছু শব্দ আছে, যে শব্দগুলোর পারিভাষিক অর্থ আল্লাহ্ তায়ালার জন্য সাব্যস্ত হবে । কিন্তু শব্দগুলোর আভিধানিক অর্থ সাব্যস্ত হবে না ।

বিভিন্ন আয়াত এবং হাদিসে আল্লাহ্ তায়ালার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে “দয়া করা” এবং “সন্তুষ্ট বা খুশি হওয়া” এবং “রাগ করা” ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার হয়েছে ।
এজাতীয় শব্দগুলোর পারিভাষিক অর্থ আল্লাহ্ তায়ালার জন্য সাব্যস্ত হবে কিন্তু আভিধানিক অর্থ না । অর্থাৎ রাগের সময় বা খুশির সময় মানুষের অভ্যন্তরীণ একটি পরিবর্তন আসে । এই পরিবর্তনকে আল্লাহ্ তায়ালার জন্য সাব্যস্ত করা যাবে না ।

যেমনঃ আপনি কারো প্রতি দয়ালু হওয়ার অর্থ হল, আপনার মাঝে দুটি জিনিস পাওয়া যাওয়াঃ
ক – দয়া বা অনুগ্রহ ।
খ – অন্তর এবং মস্তিষ্কের মাঝে একটা পরিবর্তন ।
আল্লাহ্ তায়ালার জন্য শুধু প্রথমটি সাব্যস্ত হবে । দ্বিতীয়টি সাব্যস্ত হবে না । কারণ আল্লাহ্ তালায়া মানুষের সদৃশ নয় । এবং আল্লাহ্ তায়ালা দেহ থেকে চির পবিত্র ।

৪ – কিছু শব্দ আছে, যে শব্দগুলোর শুধু আভিধানিক অর্থ, পূর্ণতার সাথে আল্লাহ্ তায়ালার জন্য সাব্যস্ত হবে ।
যেমন, জীবন, মর্যাদা, জ্ঞান, ক্ষমতা, দেখা, শোনা, ইত্যাদি ।

বিভিন্ন আয়াত এবং হাদিসে উল্লেখিত শব্দ গুলো আল্লাহ্‌ তায়ালার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয়েছে । অনুরূপ শব্দ গুলো মানুষের ক্ষেত্রেও ব্যবহার হয় ।
যেমনঃ আল্লাহ্ তায়ালার ক্ষমতা আছে অনুরূপ মানুষেরও ক্ষমতা আছে ।
কিন্তু উভয়ের মাঝে পার্থক্য হল, মানুষের ক্ষমতা সকল কিছুর উপর নয় । কিন্তু আল্লাহ্ তায়ালার ক্ষমতা সকল কিছুর উপর ।

অনুরূপ আল্লাহ্ তায়ালাও জানেন এবং মানুষও জানেন ।
কিন্তু উভয়ের জানার মাঝে পার্থক্য হল, মানুষের জানা অপূর্ণ এবং সীমাবদ্ধ কিন্তু আল্লাহ্ তালার জানা পূর্ণ এবং অসীম ।

অর্থাৎ এই প্রকারের সিফাত গুলো যেমন আল্লাহ্‌ তায়ালার সাথে ব্যবহার হয়, তেমনি মানুষের সাথেও ব্যবহার হয় । কিন্তু উভয়ের মাঝে পার্থক্য থাকে, পূর্ণতা এবং অপূর্ণতার জায়গায় ।

উল্লেখিত চারটি ভাগ স্মরণে রেখে আকিদার কিতাব মুতালা করলে, আমার মনে হয় ইন শা আল্লাহ্‌ অনেক ইশকাল বা আপত্তির জবাব নিজে নিজেই বোঝা সম্ভব।

আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের বিষয়টা ভালো করে বুঝার তাওফিক দান করুন । আমিন । এবং বাতিল অর্থ নেওয়া থেকে হেফাজত করুন । আমিন ।

جزاكم الله خيرا

◾◾রিযিক বৃদ্ধির ৬ টি ঐশী উপায়◾◾

◾রিযিকের স্বচ্ছলতা বা সংকীর্ণতা এক রহস্যঘেরা বিষয়। অনেকেই মনে করেন, রিযিক হচ্ছে অর্থকড়ি ও বিপুল ধন-ঐশ্বর্য। কিন্তু, সঠিক হলো রিযিক একটি ব্যাপক পরিধিকে অন্তর্ভুক্ত করে। এর মাঝে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সুস্বাস্থ্য, বুদ্ধিমত্তা, সময় ও জীবনের বরকত, সন্তান-সন্ততি ও তাদের সুস্থতা এবং সার্বিক কল্যাণ-উন্নতি। আর এ সবকিছুর নিয়ন্ত্রণই কেবল আল্লাহর হাতে। মহান রাবুল আলামিন তার সমগ্র সৃষ্টিকূলকে রিযিক দান করেন, তাই তিনি তার মহান গুণবাচক একটি নামও ধারণ করেছেন আর-রাজ্জাক।
আর তিনিই সমস্ত রিযিকের উৎস এবং একমাত্র রিযিকদাতা- এ বিশ্বাস আমাদের আকিদার অংশ।
রিযিক বৃদ্ধি পাক, জীবনে স্বচ্ছলতা আসুক, অন্তত প্রয়োজন পরিমাণ রিযিক আমার থাকুক- এ কামনা সবার। তবে ব্যক্তিভেদে সবার নিয়্যত এক নয়। বহু মানুষ- যারা দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে মত্ত হওয়ার জন্য রিযিক কামনা করেন, এ লেখা তাদের জন্য নয়। এ লেখা তাদের জন্য যারা প্রশান্তচিত্তে এক আল্লাহতে সমর্পিত হয়ে থাকতে প্রয়োজন পরিমাণ হালাল রিযিক কামনা করেন।

◾রিযিকে স্বচ্ছলতা কামনার পেছনে একজন মুসলমানের যে নিয়ত থাকতে পারে— তার নিয়ত হতে পারে তার উপর তার পরিবারের আল্লাহ কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব ও অধিকারগুলো আদায় করা। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী এবং বিশ্বের অপরাপর মুসলমানদের ও বিশেষত আল্লাহর যমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের মেহনতে সাহায্য করা। বেশি বেশি দান-খয়রাত করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রজন করা এবং সর্বোপরি ইসলামী সমাজকে সর্বোচ্চে তুলে ধরা। আসলে একজন মুসলমানের সম্পদ উপার্জন ও রিযিক কামনার নেপথ্যে এমন নিয়্যতই থাকা উচিত এবং তার ব্যয়ও হওয়া উচিত এসব বৃহৎ স্বার্থেই।

নিম্নে রিযিক বাড়ানোর ৬টি ঐশী উপায় বিবৃত করা হলো—

◾১. তাকওয়া :


মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনের সুরা তালাকে এরশাদ করেন,

وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مَخْرَجًا. وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا
‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে পরিত্রাণের পথ করে দেবেন এবং এমন উৎস থেকে তাকে রিযিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করেনি। যে আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করে দিবেন।’
(সুরা তালাক: ২-৩)

এ আয়াত কুরআনের এমন এক আয়াত, যাতে আল্লাহ মুমিন বান্দার সাথে তাকওয়া অর্জনের ভিত্তিতে বিশেষভাবে তাকে সাহায্য করার ও তার বিশেষ উৎস থেকে তাকে রিযিক প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। আর আল্লাহ তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না। এ সত্য সাহাবাদের জীবন ইতিহাস থেকে এ যাবৎকালের বহু বিশ্বাসী খোদা ভীরু বান্দার জীবনে প্রমাণিত। কাজেই বিপদে এবং কষ্টের সময় তাকওয়াকে অবলম্বন বানানো রিযিক লাভের প্রধানতম মাধ্যম এবং তা রিযিক লাভের এক নম্বর শর্তও বটে।

◾২. তাওয়াক্কুল:


وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا

‘যে আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।’ (সুরা তালাক: ৩)

উপরের আয়াতটিই আবার উল্লেখ করা হলো। উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমরা আয়াতের প্রথম অংশটি খেয়াল করি, আলোচনায় বলি। কিন্তু, দ্বিতীয় অংশটি ভুলে যাই। প্রথম অংশে রয়েছে তাকওয়ার কথা আর দ্বিতীয় অংশে বলা হয়েছে ‘তাওয়াক্কুল’ এর কথা।

তাওয়াক্কুল মানে হচ্ছে কোনো কিছু হাসিল করার উদ্দেশ্যে যথাসাধ্য চেষ্টা করা। একই সাথে এই বিশ্বাস রাখা যে, আল্লাহ যা আমার জন্য কল্যাণকর তাই আমাকে দিবেন। জীবনের কঠিনতম সময়ে এই তাওয়াক্কুল মানুষকে শান্তি দেয়, ধীরস্থির এবং সৎ রাখে। আল্লাহর উপর যথাযথ ভরসা স্থাপন করলে অসম্ভব স্থান থেকে রিযিক লাভ করা যায়।

◾৩. দান-সদকা করা:


مَّن ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهُ لَهُ أَضْعَافًا كَثِيرَةً وَاللّهُ يَقْبِضُ وَيَبْسُطُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ

‘এমন কে আছে যে, আল্লাহকে ঋণ দেবে, উত্তম ঋণ; অতঃপর আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ-বহুগুণ বৃদ্ধি করে দিবেন। আল্লাহই সঙ্কুচিত করেন অতঃপর তিনিই প্রশস্ততা দান করেন এবং তারই নিকট তোমরা সবাই ফিরে যাবে।’ (সুরা বাকারাহ- ২৪৫)

আমরা আল্লাহর পথে বেশি বেশি দান সদকা করব, গরীব-অসহায়দের সাহায্য করব। এতে দুটো লাভ। প্রথম লাভ হলো অন্তরের শান্তি এবং দ্বিতীয় লাভ রিযিক বৃদ্ধি। দানকে আল্লাহ তাআলা ১০ গুণ থেকে শুরু করে আরও বেশি বৃদ্ধি করে থাকেন। আপনি যে সকল নেককার মুসলমানেরই রিযিকের প্রাচুর্য দেখতে পাবেন, খুঁজে দেখবেন তাদের সবারই বেশি বেশি দানের অভ্যাস রয়েছে। সাহাবাদের জীবনেও বিষয়টি প্রমাণিত। তাই তাকওয়া এবং তাওয়াক্কুলের সাথে যদি বেশি বেশি দান-সদকা করা হয় তাহলে আপনার রিযিক এমনভাবে বাড়বে যা আপনি কখনো কল্পনাও করেননি।

◾৪. আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ ও শোকরগুজার হওয়া:


وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ
‘যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’ (সুরা ইব্রাহীম-৭)

রিযিক বৃদ্ধির চতুর্থ উপায় হচ্ছে, আল্লাহর প্রতি অনেক বেশি শোকরগুজার হওয়া। বর্তমানে আমার যা আছে তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা এবং ক্রমাগত আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করে যাওয়া। আমার চোখে যা ছোট হতে পারে তা অন্যজনের কাছে অনেক বড়। কাজেই কোনোভাবেই আল্লাহর না অকৃতজ্ঞ হওয়া যাবে না। কারণ, কৃতজ্ঞতা রিযিককে বাড়িয়ে দেয় এবং অকৃতজ্ঞতা রিযিককে ধ্বংস করে। আপনার ওপর অনুগ্রহগুলো ভালভাবে চিন্তা করুন এবং প্রতিদিন নিয়মিতভাবে করে এর শুকরিয়া আদায় করুন। ইনশাআল্লাহ রিযিক বাড়বেই।

◾৫. তওবা এবং ইস্তেগফার:


فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا. يُرْسِلِ السَّمَاء عَلَيْكُم مِّدْرَارًا. وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَارًا
‘অতঃপর বলেছি, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অবিরাম বৃষ্টিধারা প্রেরণ করবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান তৈরি করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদী-নালা প্রবাহিত করবেন।’ (সুরা নুহ: ১০-১২)

পঞ্চম উপায়টা গ্রহণ করা হয়েছে নূহ আলাইহিসসালাম এর উপদেশ থেকে, যা তিনি তার জাতিকে দিয়েছিলেন। তিনি তার জাতিকে উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন যদি তারা তওবা ইস্তেগফার করে তাহলে মহান আল্লাহ তা’আলা তাদের রিযিক অনেক বাড়িয়ে দিবেন। উপরের আয়াতে বৃষ্টি, সন্তান-সন্তুতি, নদী-নালা ও বাগান ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে, যা রিযিকের ব্যাপক মাধ্যম। পঞ্চম পয়েন্ট অত্যন্ত সহজ। আমরা সবাই প্রতিদিন অনেক গুণাহ করে ফেলি। অতএব আমাদের উচিত বেশি বেশি করে ইস্তেগফার করা, প্রতিদিন তওবা করা। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিনে ১ শতবার তওবা করতেন। আমরাও যদি বেশি বেশি তওবা ইস্তেগফার করি তাহলে আলাহর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইনশাআল্লাহ আমাদের রিযিক বেড়ে যাবে বহুগুণ।

◾৬. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা:


সহীহ বুখারিতে এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে চায় যে তার রিযিক বাড়ুক এবং তার হায়াত বাড়ুক, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।’
রিযিক বাড়ার ষষ্ঠ উপায় হচ্ছে, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা এবং টিকিয়ে রাখা। এমন অনেক আত্মীয় থাকবে যাদের সাথে কোনো কারণে কোনো এক সময় সম্পর্ক খারাপ হয়েছে এবং এখনো খারাপ আছে। উচিত হবে আপনি নিজেই এগিয়ে যান। তাদের সাথে মেলামেশা শুরু করুন, সম্পর্কটি পুনরায় জীবিত করুন। আপনার আত্মীয় স্বজন যদি কখনো আপনার সাথে কোনো অন্যায় করে থাকে তাহলে ক্ষমা করে দিন। এভাবে যখন আমরা আমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখব এবং বাঁচিয়ে রাখব, তখন আল্লাহ যেমন ওয়াদা করেছেন, আমাদের রিযিক অভাবনীয় উৎস থেকে বৃদ্ধি পাবে ইনশাআল্লাহ।

◾শেষ কথা:


সবকিছুর পর মনে রাখতে হবে যে, দুনিয়া হচ্ছে আমাদের জন্য পরীক্ষার জায়গা। রিযিক বেশি পেয়ে তা যদি আল্লাহর সন্তুষ্টিতে ব্যয় না করা হয় তাহলে সে রিযিকের মূল্য কি? বরং যত বেশি রিযিক তত বেশি পুনরুত্থান দিবসে কঠিন হিসাব-নিকাশের বিপদ। মহান আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে হাশরের ময়দানে আমাদের পূর্ণ হায়াত, সমুদয় সম্পদ, সমস্ত নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। যাদের বেশি দেয়া হয়েছে তাদের হিসাব হবে বেশি, সময় হবে বড়। কাজেই এ বিষয়টা আমাদেরকে অবশ্যই চিন্তায় রাখতে হবে।

◾মহান আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুন।

যখনই বিপদে পড়বেন অবশ্যই তিনটি কাজ করবেন।


.
১. সাদাক্বাহ (দান): রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ তোমরা সদকা কর এবং সদকা দ্বারা রোগীর রোগ চিকিৎসা কর। কেননা, সদকা রোগ এবং বালা-মুসিবত দূর করে এবং আয়ু ও নেকী বৃদ্ধি করে। -বায়হাকী।

২. ইস্তিগফার (হাদিসসম্মত উপায়ে আল্লাহর নিকট গোনাহ্ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা। এটি জপতে পারেন: “রাব্বিগফিরলি”, “আসতাগফিরুল্লাহা ওয়া আতূবু ইলাইহি”)

‘যে ব্যক্তি সর্বদা ইস্তিগফার করতে থাকে, আল্লাহ তাআলা তাকে সংকট থেকে মুক্তির পথ করে দেন। যাবতীয় দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি ও প্রশান্তি দান করেন এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দান করেন।’ (আবুদাউদ: ১৫১৮)।

৩. দরুদ পাঠ (হাদিসসম্মত হলে উত্তম। “আল্লাহুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ” পাঠ করে সংক্ষেপে দরুদ পড়তে পারেন)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক সাহাবি নবীজিকে বলেন, ‘আমার পুরো দু’আই আপনার প্রতি দরুদের জন্য নির্ধারিত করে দেব।’ তখন নবীজি বলেন, “তাহলে তোমার (সকল) ইচ্ছা/অভিপ্রায় পূরণের জন্য এটাই যথেষ্ট হবে এবং তোমার গোনাহ্ ক্ষমা করা হবে।” [তিরমিযি: ২৪৫৭, মুসতাদরাক: ২/৪২১ (সহিহ)]
.
এগুলো খুব দ্রুত উপকার পৌঁছায়। হাদিস দ্বারাও এসব আমল প্রমাণিত। সাথে হাদিসসম্মত উপায়ে দু’আ তো করবেনই।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করুক।
আমীন ইয়া রাব্ব।.

শাওয়াল মাসের রোযার ফজিলত।

“আবু আইয়ুব আনসারি রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখবে অতপর শাওয়ালে ছয়টি রোজা পালন করবে সে যেন যুগভর রোজা রাখল।” [মুসলিম : ১১৬৪] সাওবান রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন: রমজানের রোজা দশ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দু’মাসের রোজার সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা। অপর রেওয়ায়েতে আছে: “যে ব্যক্তি রমজানের রোজা শেষ করে ছয় দিন রোজা রাখবে সেটা তার জন্য পুরো বছর রোজা রাখার সমতুল্য। (যে সৎকাজ নিয়ে এসেছে, তার জন্য হবে তার দশ গুণ।” [সূরা আন‘আম-আহমদ : ৫/২৮০, দারেমি : ১৭৫৫] হাদিস থেকে যা শিখলাম: এক. শাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলত জানা গেল যে, যে ব্যক্তি পুরো রমজান সিয়াম পালনের পর এ রোজা ছয়টি করবে সে যেন সারা জীবন রোজা করল। এ এক বিরাট আমল এবং বিশাল অর্জন। দুই. বান্দার ওপর আল্লাহর কত দয়া যে তিনি অল্প আমলের বিনিময়ে অধিক বদলা দিবেন। তিন. কল্যণকাজে প্রতিযোগিতা স্বরূপ এ ছয় রোজার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা মুস্তাহাব। যাতে রোজাগুলো ছুটে না যায়। কোনো ব্যস্ততাই যেন পুণ্য আহরণের এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত করতে না পারে। চার. এ রোজা করা যাবে মাসের শুরু-শেষ-মাঝামাঝি সব সময়। ধারাবাহিক ও অধারাবাহিক যেভাবেই করা হোক না কেন রোজাদার অবশ্যই এর সওয়াবের অধিকারী হবে যদি আল্লাহর কাছে কবুল হয়। পাঁচ. যার ওপর রমজানের রোজা কাজা আছে সে আগে তার কাজা করবে তারপর শাওয়ালের রোজায় ব্রতী হবে। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে রমজানের রোজা রাখবে অর্থাৎ পুরোপুরি। আর যার ওপর কাজা রয়ে গেছে সে তো রোজা পুরা করেছে বলে গণ্য হবে না যতক্ষণ ওই রোজাগুলোর কাজা আদায় না করে।” [মুগনি : ৪/৪৪০] তাছাড়া ওয়াজিব আদায়ের দায়িত্ব পালন নফল আদায়ের চেয়ে অধিক গুরুত্ব রাখে। ছয়. মহান শরিয়ত প্রণেতা ফরজের আগে-পরে নফল প্রবর্তন করেছেন যেমনঃ ফরজ সালাতের আগে-পরের সুন্নতগুলো এবং রমজানের আগে শাবানের রোজা আর পরে শাওয়ালের রোজা। সাত. এই নফলসমূহ ফরজের ত্রুটিগুলোর ক্ষতি পূরণ করে। কারণ রোজাদার অনর্থক বাক্যালাপ, কুদৃষ্টি প্রভৃতি কাজ থেকে সম্পূর্ণ বাঁচতে পারে না যা তার রোজার পুণ্যকে কমিয়ে দেয়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম যাদেরকে সর্বোত্তম বলেছেন।

নবী করিম ﷺ – বলেছেন ১২ জন মানুষ সবচেয়ে সর্বোত্তম !
.
আসুন চেক করে দেখি আপনি আমি সেই লিস্টে আছি কি না?
.
● এক.
রাসুলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন,
ﺧَﻴْﺮُﻛُﻢْ ﻣَﻦْ ﺗَﻌَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥَ ﻭَﻋَﻠَّﻤَﻪُ
‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি, যে নিজে কোরআন শেখে এবং অন্যকে শেখায়।’ (বুখারি, হাদিস নম্বর : ৫০২৭)
.
● দুই.
রাসুলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন,
ﺇِﻥَّ ﺧِﻴَﺎﺭَﻛُﻢْ ﺃَﺣَﺎﺳِﻨُﻜُﻢْ ﺃَﺧْﻼَﻗًﺎ
‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ওই ব্যক্তি, যে তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম আচরণের অধিকারী।’ (বুখারি, হাদিস নম্বর : ৬০৩৫)
.
● তিন.
রাসুলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন,
ﺇِﻥَّ ﺧِﻴَﺎﺭَﻛُﻢْ ﺃَﺣْﺴَﻨُﻜُﻢْ ﻗَﻀَﺎﺀً
‘তোমাদের মধ্যে সর্বসেরা ব্যক্তি সে, যে ঋণ পরিশোধের বেলায় ভালো।’ (বুখারি, হাদিস নম্বর : ২৩০৫)
.
● চার.
রাসুলুল্লাহ ( ﷺ ) ইরশাদ করেছেন,
‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি, যার কাছ থেকে সবাই কল্যাণ আশা করে, অনিষ্টের আশঙ্কা করে না।’ (তিরমিজি, হাদিস নম্বর: ২২৬৩/২৪৩২)
.
● পাঁচ.
রাসুলুল্লাহ ( ﷺ ) ইরশাদ করেছেন,
‘তোমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ওই ব্যক্তি, যে তার পরিবারের কাছে ভালো।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নম্বর : ৪১৭৭)
.
● ছয়.
রাসুলুল্লাহ ( ﷺ ) ইরশাদ করেছেন,
ﺧِﻴَﺎﺭُﻛُﻢْ ﺃَﻃْﻮَﻟُﻜُﻢْ ﺃَﻋْﻤَﺎﺭًﺍ ﻭَﺃَﺣْﺴَﻨُﻜُﻢْ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟًﺎ
তোমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি সেই, যে তোমাদের মধ্যে বয়সে বেশি এবং (নেক) কাজে উত্তম। (আহমাদ ৭২১২, ৯২৩৫, সিঃ সহীহাহ ১২৯৮)
.
● সাত. রাসুলুল্লাহ ( ﷺ ) ইরশাদ করেছেন,
ﺧَﻴْﺮُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺃﻧْﻔَﻌُﻬُﻢْ ﻟِﻠﻨَّﺎﺱِ
সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ সেই ব্যক্তি, যে মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী। (সহীহুল জামে’ হা/ ৩২৮৯, দারাক্বুত্বনী, সিঃ সহীহাহ ৪২৬)
.
● আট.
রাসুলুল্লাহ ( ﷺ ) ইরশাদ করেছেন,
ﻣَـﺨْﻤُﻮْﻡِ ﺍﻟْﻘَﻠْﺐِ ﺻَﺪُﻭْﻕِ ﺍﻟﻠِّﺴَﺎﻥِ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﺻَﺪُﻭْﻕُ ﺍﻟﻠِّﺴَﺎﻥِ ﻧَﻌْﺮِﻓُﻪُ ﻓَﻤَﺎ ﻣَـﺨْﻤُﻮﻡُ ﺍﻟْﻘَﻠْﺐِ
‘শ্রেষ্ঠ মানুষ হলো যার অন্তর পরিচ্ছন্ন ও মুখ সত্যবাদী। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসুল! সত্যবাদী মুখ বোঝা গেল, কিন্তু পরিচ্ছন্ন অন্তরের অধিকারী কে? রাসুলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেন, যে অন্তর স্বচ্ছ ও নির্মল, মুত্তাকি, যাতে কোনো পাপ নেই, বাড়াবাড়ি বা জুলুম নেই, নেই খেয়ানত ও বিদ্বেষ। (ইবনে মাজাহ ৪২১৬ ,সহিহুল জামে, হাদিস : ৩২৯১)
.
● নয়.
রাসুলুল্লাহ ( ﷺ ) ইরশাদ করেছেন,
ﺧَﻴْﺮُ ﺍﻷَﺻْﺤَﺎﺏِ ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺧَﻴْﺮُﻫُﻢْ ﻟِﺼَﺎﺣِﺒِﻪِ ﻭَﺧَﻴْﺮُ ﺍﻟْﺠِﻴﺮَﺍﻥِ ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺧَﻴْﺮُﻫُﻢْ ﻟِﺠَﺎﺭِﻩِ
‘আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম সঙ্গী সে, যে তার সঙ্গীর কাছে উত্তম। আর আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম প্রতিবেশী সে, যে তার প্রতিবেশীর কাছে উত্তম।’ (তিরমিজি, হাদিস নম্বর : ১৯৪৪)
.
● দশ.
রাসুলুল্লাহ ( ﷺ ) ইরশাদ করেছেন,
ﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﺧِﻴَﺎﺭِﻛُﻢْ ﺃَﺣْﺴَﻨَﻜُﻢْ ﺃَﺧْﻠَﺎﻗًﺎ
‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সে, যার চরিত্র সবচেয়ে বেশি সুন্দর।’ (বুখারি, হাদিস নম্বর : ৩৫৫৯)
.
● এগারো
রাসুলুল্লাহ ( ﷺ ) বলেন
ﺧَﻴْﺮُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻣَﻨْﺰِﻟَﺔً ﺭَﺟُﻞٌ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﺘْﻦِ ﻓَﺮَﺳِﻪِ ﻳُﺨِﻴﻒُ ﺍﻟْﻌَﺪُﻭَّ ﻭَﻳُﺨِﻴﻔُﻮﻧَﻪُ
মর্যাদায় সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি সে, যে নিজ ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে শত্রুকে সন্ত্রস্ত করে এবং শত্রুরাও তাকে সন্ত্রস্ত করে। (বাইহাক্বীর শুআবুল ঈমান ৪২৯১, সিলসিলা সহীহাহ ৩৩৩৩)
.
● বারো
রাসুলুল্লাহ ( ﷺ ) বলেনঃ
ﻟَﻤُﺆْﻣِﻦٌ ﻣُﺠَﺎﻫِﺪٌ ﺑِﻨَﻔْﺴِﻪِ ﻭَﻣَﺎﻟِﻪِ ﻓﻲ ﺳَﺒﻴﻞِ ﺍﻟﻠﻪِ
ঐ মু’মিন (সর্বশ্রেষ্ঠ) যে আল্লাহর পথে তার জান ও মাল দিয়ে যুদ্ধ করে।’ (বুখারী ২৭৮৬, ৬৪৯৪, মুসলিম ৪৯৯৪-৪৯৯৫)
.
■ আমার মধ্যে এর কয়টি গুণ রয়েছে? উত্তরটি নিজেই বের করি।
.
আল্লাহপাক যেন আমাদেরকে এই রকম সর্বোত্তম মানুষ হবার তাওফীক দেন। আমীন ইয়া রাব্বুল আলামীন।
.
.